January 26, 2025, 1:13 am
শিরোনাম:
গাজীকম‌প্লে‌ক্সের পর পর ৪র্থ বা‌রের মতো সভাপ‌তি নির্বা‌চিত আরিফ রায়পুরে চরের কৃষি জমি দখলের অভিযোগে উত্তপ্ত পরিস্থিতি রায়পুরে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে দুই স্কুল ছাত্রী গুরুতর জখম তিন তিনবা‌রের সভাপ‌তি আবা‌রো নির্বা‌চিত হ‌বেন প্রত‌্যাশা ব‌্যবসায়ী‌দের রায়পুরে অপহৃত পেইন্টার উদ্ধার: গ্রেপ্তার তিনজন রায়পুরে দুঃসাহসিক চুরি, ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫ লাখ টাকা রায়পুরে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় হায়দরগঞ্জ মডেল স্কুল চ্যাম্পিয়ন রায়পুরে ২০ পরিবারের মাঝে ঢেউ টিন ও নগদ অর্থ বিতরণ রায়পুরে বামনী ইউনিয়ন বিএনপির প্রতিনিধি সভা রায়পুরে কেরোয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিদর্শিকার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ
নোটিশ :
সাংবাদিক নিয়োগ চলছে। যোগাযোগ ০১৭৭৯০৫৫১১১

রায়পুরে কেরোয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিদর্শিকার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

Reporter Name

প্রদীপ কুমার রায় :
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার কেরোয়া ইউনিয়নে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রের পরিদর্শিকা (এফডব্লিউভি) সুফিয়া বেগমের বিরুদ্ধে কর্মস্থলে প্রায়ই অনুপস্থিত থাকা, নরমাল ডেলিভারি করার নামে প্রসূতি মায়েদের কাছ থেকে ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা নেয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সরকার বরাদ্দকৃত আবাসিক কোয়ার্টারে থেকে সপ্তাহে সাতদিন সেবা দেয়ার নির্দেশনা থাকলেও পায়ে সমস্যার কারণ দেখিয়ে সেখানে না থেকে নিজের ভাইয়ের বৌকে দিয়ে নরমাল ডেলিভারির কাজ করান এফডব্লিউভি সুফিয়া আক্তার। প্রায়ই তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে দায়সারা সেবা দিচ্ছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগী গর্ভবতী মা ও শিশুসহ ইউনিয়নের কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় জনসাধারণ, ভূক্তভোগী রোগী ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, শহরের আধুনিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত প্রান্তিক গ্রামাঞ্চলের গর্ভবতী ও প্রসূতি মা সহ নারীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে সরকার ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র স্থাপন করে। পরিবার কল্যান পরিদর্শিকাদের সার্বক্ষণিক আবাসন ব্যবস্থা ও পর্যাপ্ত সরকারি ঔষধ সরবরাহ করে আসছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের দেয়া দায়িত্ব ও নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা সুফিয়া বেগম বছরের পর বছর স্বৈরশাসকের ক্ষমতাবলে চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়ে আসছিলেন। শুধু সরকারি ঔষধেরই অপচয় করেননি গর্ভবতী মা, প্রসূতি মা ও নারীরাও বঞ্চিত হয়েছেন তাদের স্বাস্থ্য অধিকার থেকে। ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে সরকারি কর্মচারী বিধির বাইরে গিয়ে একজন অদক্ষ মহিলাকে দিয়ে তিনি প্রসূতি মায়েদের ডেলিভারি করাচ্ছেন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কেরোয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা (এফডব্লিউভি) সুফিয়া বেগমকে পাওয়া যায়নি এবং তার জন্য বরাদ্দকৃত কক্ষে তালাবদ্ধ। ফোন করলে তিনি জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মিটিংয়ে আছেন।

সেবা নিতে আসা মোল্লার হাট এলাকার সুপ্পন আলী বেপারি বাড়ীর মো: ইমন মিয়ার স্ত্রী রিয়া আক্তার (১৮) বলেন, আমারা সেবা নিতে এসে কখনোই তাকে পাইনি। তার কক্ষ তালাবদ্ধ থাকে। শুনেছি তিনি নাকি এখানে সবসময় থেকে সেবা দেয়ার কথা, কই তিনি তো এখানে থাকেন না, তাহলে আমরা গ্রামের গরিব অসহায় মানুষ কিভাবে সেবা পাবো। আমার নরমাল সন্তান প্রসবের জন্য আমার শাশুড়ির কাছ থেকে প্রথমে ১২০০ টাকা এবং ডেলিভারির পর ৪ হাজার টাকা নিয়েছে। পরে বকসিসের নাম করে আরো ৭শ টাকা দিতে হয় খাদিজা বেগমকে।

আলোনীয়া গ্রামের একজন ভুক্তভোগী প্রসূতি মায়ের স্বামী বলেন, আমাদের আয়লা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের সুফিয়া আক্তার নামে একজন (এফডব্লিউভি) আছেন। তবে তিনি এখনে না থেকে নিজের ভাইয়ের বৌকে কোয়ার্টারে রেখে টাকার বিনিময়ে প্রসূতিসেবা দিয়ে থাকেন। গত ১৬ ডিসেম্বর আমার স্ত্রী নরমাল ডেলিভারি করতে আসলে আট হাজার টাকায় চুক্তি করেন সুফিয়া। পরে সুফিয়া বেগমে ডেলিভারি না করে তার ভাইয়ের বৌকে পরিচয়ে মুন্নি আক্তার নামে এক মহিলা ডেলিভারি করতে এলে আমরা আপত্তি করি। পরে জানতে পারি সুফিয়া বেগমই তার ভাইয়ের স্ত্রী মুন্নি আক্তারকে ট্রেনিং করিয়ে তাকে দিয়েই ডেলিভারির কাজ করান। প্রসূতি মায়েদের স্পর্শ কাতর বিষয়ে আমি বাড়াবাড়ি না করে আট হাজার টাকা পরিশোধ করে আমরা চলে আসি।

অভিযুক্ত স্বাস্থ্যকর্মী (এফডব্লিউভি) সুফিয়া বেগমের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। একবার ফোন ধরলেও সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন।

এ ব্যাপারে উপ-পরিচালক পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা লক্ষ্মীপুর নাজমুল হাসান জানান, কেরোয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শিকা (এফডব্লিওভি) সুফিয়া বেগমের ব্যাপারে অভিযোগটি সত্য। মু্নি আক্তার নামে একজন মহিলাকে কোয়ার্টারে রেখে প্রসূতি মায়েদেরকে সেবা দেওয়ার নামে কিছুতেই তিনি পয়সা নিতে পারেন না। উপজেলার দায়িত্বরত কর্মকর্তা নোমান সাহেবকে এ বিষয়ে কঠোর নজর রাখতে বলেছি। তবে তার জন্য বরাদ্দকৃত আবাসিক কোয়ার্টার রয়েছে। তাকে কর্মস্থলের কোয়ার্টারে থেকে সেবা দেয়ার জন্য নির্দেশনা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুকে আমরা